সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অগণিত প্রাচীন রাজকীয় দুর্গ এবং প্রাসাদ যা কয়েকশ বছর আগে নির্মিত। এই স্থানগুলি একজন আধুনিক ব্যক্তিকে তার নিজের বা বিদেশী দেশের অতীতে প্রবেশ করার অনুমতি দেয় যাতে অতীতের শতাব্দীর চেতনা অনুভব করা যায় এবং কল্পনা করার চেষ্টা করা যায় যে সেই দিনগুলিতে লোকেরা কীভাবে বাস করত এবং কোন পরিস্থিতিতে। তার মধ্যে একটি প্যারিসের লুক্সেমবার্গ প্রাসাদ। এই স্থাপত্য কাঠামোর শক্তিশালী দেয়ালগুলো কী কী?
প্রাসাদের ইতিহাস
1615 সালে, 2 এপ্রিল, রানী মারি ডি মেডিসি তার ভবিষ্যতের প্রাসাদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। 16 বছর পরে, এটি তার পছন্দসই এবং প্রিয় দুর্গ হয়ে উঠবে। কিন্তু বোরবনের হেনরি চতুর্থের স্ত্রী এবং লুই XIII জাস্টের মা বেশিদিন তাদের চেম্বার উপভোগ করতে পারবেন না। ল্যুভরকে ভয়ানকভাবে অপছন্দ করেন এবং ক্রমাগত ইতালিকে হারিয়ে ফেলেন, মারিয়া বিধবা হয়ে একটি প্রাসাদ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন যা তাকে তার স্থানীয় ফ্লোরেন্সের স্থাপত্যের কথা মনে করিয়ে দেবে। সে কিছু কিনতে চেয়েছিলনিজস্ব তিনি এমন একটি জায়গার স্বপ্ন দেখেছিলেন যেখানে তিনি থাকতে এবং থাকতে খুশি হবেন৷
লাক্সেমবার্গ প্রাসাদটি স্থপতি স্যালোমন ডি ব্রোসের নকশা অনুসারে নির্মিত হয়েছিল, যিনি ফ্লোরেনটাইন পালাজো পিত্তিকে তাঁর সৃষ্টির ভিত্তি করেছিলেন। তবে ফলাফল ইতালি ও ফ্রান্সের মিশ্রণে। তবে এই সমন্বয়টি দুর্দান্ত ছিল। রানীর চমৎকার স্বাদ ছিল, তাই তিনি তার প্রিয় প্রাসাদের জন্য সেরাটি বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই লক্ষ্যে, মারিয়া ডিজাইনার রুবেনসকে নিয়োগ করেছিলেন - সেই সময়ে ইউরোপের একজন খুব বিখ্যাত ব্যক্তি।
প্রাঙ্গণের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার দায়িত্ব তাকে অর্পণ করার পরে, রানী তার পছন্দের জন্য অনুশোচনা করেননি। তার জন্য, রুবেনস "মারি ডি মেডিসির জীবনী" নামে একটি সিরিজ পেইন্টিং তৈরি করেছিলেন। রানী এই 24 টি কাজ এতটাই পছন্দ করেছিলেন যে তিনি তার স্মৃতিকে স্থায়ী করার জন্য ডিজাইনারের কাছ থেকে তার স্বামীর প্রতিকৃতি অর্ডার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু ভদ্রমহিলা তার স্বপ্নের প্রশংসা করতে বেশি সময় পাননি।
প্রাসাদটি তৈরি হওয়ার কয়েক মাস পরে, রানীকে তার নিজের ছেলে প্যারিস থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীকালে, লুক্সেমবার্গ প্রাসাদ কঠিন সময় অতিক্রম করে। নাৎসি দখলের সময় এটি ছিল জার্মান বিমান বাহিনীর সদর দপ্তর। তারপরে দুর্গটি রাজনৈতিক বন্দীদের জন্য একটি কারাগারের ভূমিকা পালন করেছিল এবং তার পরে এটি নেপোলিয়ন বোনাপার্টের বাসভবনে পরিণত হয়েছিল।
আগে, এমনকি দুর্গ নির্মাণের আগেও, সম্পত্তিটি লুক্সেমবার্গের ফ্রাঙ্কোইসের ছিল। মারিয়া যখন তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিল, তখন তারা আজকের তুলনায় 3 গুণ ছোট ছিল। দেরি না করে রানী তার সম্পত্তির আশেপাশে আরও বেশ কিছু জমি কিনে নেন, যেখানে খামার, বাড়ি এবং বাগান ছিল, যাতে প্লটটি আরও বড় হয় এবং একটি বাগান করা যায়। মোট 23 হেক্টর পার্ক এলাকা হতে পরিণতসবুজ স্থান, পুকুর এবং ভাস্কর্য সহ - এমন একটি এলাকা যা আজ বিশ্বের অন্যতম সুন্দর এবং নোবেল হিসাবে বিবেচিত হয়৷
লাক্সেমবার্গ প্যালেস আজ
1790 সালে দুর্গটি জাতীয় মর্যাদা অর্জন করে। তখনই তাকে কারাগারে পরিণত করা হয়। এবং সেই সময় থেকে, প্যারিসের লুক্সেমবার্গ প্রাসাদ, যার ছবিটি উপরে দেখা যায়, সক্রিয়ভাবে এক হাত থেকে অন্য হাতে স্থানান্তরিত হতে শুরু করে। শুধুমাত্র 1958 সালে, প্রায় 200 বছর পর, এটি সেনেটের অন্তর্গত হতে শুরু করে। আজ, একটি সুন্দর এবং রাজকীয় স্থাপত্য কাঠামোর ভিতরে সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিল্ডিংয়ের অভ্যন্তরীণ এবং বহির্ভাগে বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়েছিল, কারণ দুর্গটি পুরানো এবং নিয়মিত পুনরুদ্ধারের প্রয়োজন। কিন্তু বাইরের দিক থেকে এটি প্রায় চার শতাব্দী আগে যেমন ছিল তেমনই রয়েছে।
লাক্সেমবার্গ প্রাসাদের বিবরণ
প্রাসাদের কেন্দ্রীয় গেটটি তিন তলা প্যাভিলিয়ন দিয়ে মুকুটযুক্ত। এবং উপরের স্তরে মূলত রানীর জন্য একটি ছাদ ছিল, যেখান থেকে মুকুটধারী মহিলা বাগানটির প্রশংসা করতে পারেন। আশ্চর্যজনকভাবে, প্রতিটি তলায় স্থাপত্যের বিভিন্ন শৈলীতে তৈরি কলাম ছিল:
- প্রথম - টাস্কানে;
- দ্বিতীয়তে - ডরিকতে;
- তৃতীয়তে - আয়নিকে।
প্রাসাদে যে স্থাপত্য শৈলী বিরাজ করে তাকে ট্রানজিশনাল বলা হয়: রেনেসাঁ থেকে বারোক পর্যন্ত। এই কারণেই দুর্গটি এত অস্বাভাবিক দেখায়। এবং এটা কিছুই জন্য অনন্য বলা হয় না. প্রাসাদের অভ্যন্তরীণ অংশ আজ পর্যন্ত টিকেনি। এই বোধগম্য. সর্বোপরি, বাসস্থানের মর্যাদা পরেমেরি মেডিসি, তিনি আরও অনেক নাম এবং উদ্দেশ্য পরিবর্তন করেছেন। যেহেতু বিল্ডিংটি সেনেটের অন্তর্গত, তাই এর প্রবেশদ্বার কঠোরভাবে সীমিত। যাইহোক, উইংগুলির একটিতে অবস্থিত একটি জাদুঘর রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এবং প্রাসাদের বাহ্যিক আকর্ষণ সারা বছরই প্রশংসিত হতে পারে।
দুর্গের মাঠ
সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে লুক্সেমবার্গ গার্ডেন এবং প্যারিসের একটি প্রাসাদ। পার্ক জোন কম মনোমুগ্ধকর দৃশ্য নয়। প্রত্যেকে বছরে 12 মাস এবং সপ্তাহে 7 দিন এই অঞ্চলে হাঁটতে পারে। বাগানটি প্রায় প্রাসাদের মতো একই সময়ে উঠেছিল। এবং একই নামের তার পাথর "বন্ধু" এর সাথে, তিনি রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা যে পরিস্থিতিতে নিমজ্জিত হয়েছিল তার উপর নির্ভর করে তিনি পরিবর্তিত হয়েছিলেন। ধীরে ধীরে, পার্কে আসল ভাস্কর্যগুলি উপস্থিত হয়েছিল, একক দলে একত্রিত হয়েছিল, সম্রাট, সেনাপতি, রাজা, চিন্তাবিদ এবং অন্যান্য ব্যক্তিত্বের চিত্রগুলিকে প্রতিনিধিত্ব করে৷
তার অস্তিত্ব জুড়ে, বাগানটি এখন অনেক বিখ্যাত কবি, ভাস্কর, লেখক এবং শিল্পীকে দেখেছে। আজ, এটি সারা বিশ্ব থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক গ্রহণ করে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। তাদের জন্য, এটি একটি বাস্তব বিস্তৃতি, কারণ পার্কটি প্রচুর বিনোদন প্রদান করে:
- গজেবোতে মিউজিক শো;
- পুতুল শো;
- পনি রাইড;
- পুকুর, যেখানে বিভিন্ন মডেলের জাহাজ একটি "দীর্ঘ" সমুদ্রযাত্রায় চালু হয়;
- আকর্ষণ সহ খেলার মাঠ।
এছাড়াও, অতিথিদের সুবিধার্থে এবং সন্তুষ্টির জন্য, লুক্সেমবার্গ গার্ডেন ছিলওপেন এয়ার রেস্তোরাঁ। এটি সুস্বাদু জাতীয় খাবার এবং অবশ্যই স্থানীয় ওয়াইন পরিবেশন করে।
লাক্সেমবার্গ প্রাসাদে ভ্রমণ
বাগানটি শীতকালে সকাল 7 টা থেকে বিকাল 5 টা পর্যন্ত এবং গ্রীষ্মে সকাল 8 টা থেকে 10 টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। জাদুঘরটি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারা বছর খোলা থাকে। 365 দিনের মধ্যে কিছু তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে - প্রাসাদের দরজা খুলবে এবং প্রত্যেকে দুর্গের অভ্যন্তরটি দেখতে সক্ষম হবে। আপনাকে যা করতে হবে তা হল ফোনের মাধ্যমে ফরাসি যাদুঘর ব্যবস্থাপনাকে কল করা: 331/44-61-21-70। লাক্সেমবার্গ প্রাসাদে প্রবেশ, যার ফটো উপরে দেখানো হয়েছে, এবং একই নামের বাগানের জন্য অর্থ প্রদান করা হয়: প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য - 11 €, 25 বছরের কম বয়সী যুবকদের জন্য - 9 €। কিন্তু 9 বছরের কম বয়সী বাচ্চারা বিনামূল্যে এটি দেখতে পারবে।
প্যারিসে লুক্সেমবার্গ প্রাসাদ: অবস্থান
দুর্গটি এখানে অবস্থিত: Paris, 75006, 6th arrondissement, 15 rue de Vaugirard (Saint-Germain-des-Prés)। আপনি যদি মেট্রো লাইন B ধরে লুক্সেমবার্গ RER স্টেশনে যান তবে আপনি এটিতে যেতে পারেন। যোগাযোগের ফোন: 33 01 42 34 20 00.
