ইন্ডিয়ানা একটি মার্কিন রাজ্য যা দেশের মধ্য-পশ্চিমে অবস্থিত। ইন্ডিয়ানা গঠন এবং বিকাশের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। এই মুহুর্তে, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শিল্পোন্নত অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। দৈনন্দিন জীবনে, ইন্ডিয়ানাকে "স্টেট অফ দ্য হুসিয়ার" (বড় মানুষ) বলা হয়।
রাজ্যের প্রাথমিক ইতিহাস
প্রথম ইউরোপীয়রা আমেরিকার মাটিতে পা রাখার বহু শতাব্দী আগে, বর্তমানে ইন্ডিয়ানা রাজ্যের ভূখণ্ডে বিভিন্ন ভারতীয় উপজাতি বসবাস করত, যার মধ্যে মিসিসিপিয়ান সংস্কৃতির অন্তর্গত ভারতীয়রা সবচেয়ে বেশি ছিল। তারা উঁচু ঢিবি তৈরি করেছিল, যার সমতল চূড়ায় তারা তাদের বসতি স্থাপন করেছিল। এর মধ্যে কিছু কাঠামো আজও অক্ষত আছে।
ভারতীয়দের উত্তরসূরি যারা ঢিবি তৈরি করেছিল তারা ছিল মিয়ামি, শাওনি, ওয়েহের মতো উপজাতি। তারা এই জমিগুলিকে উন্নত করেছিল যতক্ষণ না ইরোকুয়েস এসে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তাদের তাড়িয়ে দেয়।
আমেরিকান জমির জন্য সংগ্রামে ইউরোপ
ইন্ডিয়ানা ভূমির ইউরোপীয় ইতিহাসের সূচনা হয় XVII শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, যখন অভিযাত্রী রেনে দে লা স্যালে প্রথম পা রাখেনআমেরিকান ভূমি এবং তার পরে ফরাসীদের নিয়ে আসে, যারা পশমের জন্য ভারতীয়দের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে শুরু করে। 18 শতকে, এই অঞ্চলটিকে নিউ ফ্রান্স বলা হত, যা ওহিওর বর্তমান রাজ্যের এলাকাও অন্তর্ভুক্ত করেছিল। যাইহোক, 1761 সালে, গ্রেট ব্রিটেন এই অঞ্চলগুলির জন্য সংগ্রাম শুরু করে। ব্রিটিশরা আমেরিকার উত্তর-পূর্ব অংশে ল্যান্ড করার অধিকার ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছিল এবং ইতিমধ্যেই 1763 সালে ইন্ডিয়ানা তাদের অন্তর্গত হতে শুরু করে।
কিন্তু ভারতীয়রা, যারা সক্রিয়ভাবে ফরাসিদের সমর্থন করেছিল, তারা পরিস্থিতির এই বিকাশে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট ছিল এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছিল, যার ফলে ভারতীয় নেতা পন্টিয়াক একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। যুদ্ধ বেশ কয়েক বছর ধরে চলেছিল, এবং ভারতীয় উপজাতিদের পূর্বাভাসযোগ্য পরাজয় সত্ত্বেও, ব্রিটিশদের গুরুত্ব সহকারে জায়গা তৈরি করতে হয়েছিল এবং এই জমিগুলিতে তাদের দাবি সীমিত করতে হয়েছিল৷
18 শতকের দ্বিতীয়ার্ধে, কুইবেক নামক একটি প্রদেশ তৈরি করা হয়েছিল, যার মধ্যে ইন্ডিয়ানা এবং আমেরিকার ভবিষ্যতের অন্যান্য রাজ্যের বেশ কয়েকটি ভূমি অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারতীয়দের সাথে সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল এবং এটি একটি ক্রমবর্ধমান হুমকিস্বরূপ ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি, জর্জ ওয়াশিংটন, এই সংঘর্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা সৈন্যকে জড়িত করেছিলেন, তবে আমেরিকান সৈন্যরা আরও বেশি গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। এবং শুধুমাত্র শতাব্দীর শেষের দিকে, আমেরিকান শক্তির স্বীকৃতির সাথে আমেরিকান এবং ভারতীয়দের মধ্যে শান্তি সমাপ্ত হয়েছিল৷
উন্নত ভূখণ্ডের উত্তর-পশ্চিম অংশ একটি রাজ্যের মর্যাদা পাওয়ার পর এবং "আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র" নামকরণের পর, ওহাইও, মিশিগান এবং অন্যান্য রাজ্যগুলির অঞ্চলগুলি আলাদা হতে শুরু করে। এভাবেই রাজ্যটি ইন্ডিয়ানা, যাপ্রধানত নেটিভদের দ্বারা অধ্যুষিত, যখন ইউরোপীয় জনসংখ্যা এখনও সংখ্যালঘু ছিল। উইলিয়াম হ্যারিসনের নেতৃত্বে, ভবিষ্যতে - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম রাষ্ট্রপতি৷
ইন্ডিয়ানা রাজ্য, যার শহরগুলি ঘুরে ঘুরে রাজধানীর মর্যাদা পেয়েছে, গঠনের একটি গতিশীল এবং অত্যন্ত বিতর্কিত ইতিহাস দ্বারা আলাদা। এত বড় নাম নিয়ে প্রথম গভর্নর যে সূচনা করেছিলেন তা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই আশাব্যঞ্জক ছিল। 1985 সাল থেকে, ইন্ডিয়ানা রাজ্যের রাজধানী হল ইন্ডিয়ানাপলিস শহর, হুসিয়ার ল্যান্ডের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত।
ইন্ডিয়ানার অর্থনৈতিক উত্থান
পরের দশকগুলি রাজ্যে দাসপ্রথা বিলুপ্তি, গ্রেট ব্রিটেনের সাথে যুদ্ধ এবং ব্রিটিশ সৈন্যদের সমর্থনকারী বেশ কয়েকটি ভারতীয় উপজাতি, বাণিজ্য রুট এবং রেলপথ স্থাপন, নাগরিক যুদ্ধ এবং অন্যান্য ঘটনা যা উন্নয়ন রাষ্ট্রের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলে। তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র ইন্ডিয়ানাকে উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করেছে, বিশেষ করে অটোমোবাইল শিল্প। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, ইন্ডিয়ানাতে সামরিক সরঞ্জাম এবং গোলাবারুদের নিরবচ্ছিন্ন উত্পাদন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল। আজ অবধি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ধাতুবিদ্যা ইন্ডিয়ানা রাজ্যের সবচেয়ে গুরুতর সুবিধা রয়ে গেছে, যা এটিকে শিল্পের দিক থেকে নেতাদের মধ্যে একটি থাকার অনুমতি দেয়৷
বর্তমানে, রাজ্যের জনসংখ্যা সাড়ে ছয় মিলিয়নেরও বেশি। ইন্ডিয়ানাপোলিস সবচেয়ে বড় শহর, যার বাড়িপ্রায় 1.2 মিলিয়ন মানুষ।
ইন্ডিয়ানা প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
ইন্ডিয়ানা এমন একটি রাজ্য যার অনুকূল অবস্থান রয়েছে। এর পরিমিত অঞ্চল (প্রায় 95 বর্গ কিলোমিটার) সত্ত্বেও, রাজ্যটি দুটি ভিন্ন সময় অঞ্চলে বাস করে এবং সমতল এবং উপত্যকা অঞ্চলকে একত্রিত করে এবং উত্তরে এটি মিশিগান হ্রদের উপকূল বরাবর প্রসারিত, যা দেশের বৃহত্তম হ্রদগুলির মধ্যে একটি। বৃহত্তম নদী, যার দৈর্ঘ্য আটশো কিলোমিটারেরও বেশি, ওহাইও নদীর একটি উপনদী যাকে ওয়াবাশ বলা হয়। ইন্ডিয়ানার মানুষ নদীকে নিয়ে খুব গর্বিত এবং একে রাজ্যের প্রতীক মনে করে। উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিভিন্ন প্রতিনিধিতে সমৃদ্ধ, হুসিয়ার ন্যাশনাল ফরেস্ট রিজার্ভ স্থানীয়দের জন্য গর্ব ও প্রশংসার উৎস। অনেকে সঠিকভাবে বিশ্বাস করেন যে ইন্ডিয়ানা আশ্চর্যজনকভাবে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির একটি রাজ্য, হাজার হাজার বড় এবং ছোট হ্রদ এবং মজুদ রয়েছে। রাজ্যের একটি মহাদেশীয় জলবায়ু রয়েছে, বরং ঠান্ডা শীতকাল এবং গরম গ্রীষ্ম। টর্নেডো-প্রবণ এলাকা থেকে দূরত্ব ইন্ডিয়ানাকে বসবাসের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
পর্যটকদের জন্য বাতিঘর
একটি সাধারণ, "অ-পর্যটন" জলবায়ু সত্ত্বেও, ইন্ডিয়ানা - "বড় রাজ্য" - বার্ষিক বিপুল সংখ্যক অতিথিকে আকর্ষণ করে। কার রেসিংয়ের জন্মস্থান হিসাবে (এটি এখানেই প্রথম বৃহত্তম সার্কিটটি 1909 সালে নির্মিত হয়েছিল), ইন্ডিয়ানা প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা এবং বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের একত্রিত করে যারা ঐতিহ্যবাহী সমাবেশে এত বড় আকারের ইভেন্টে যোগ দিতে চায়।
ন্যাশনাল রিজার্ভ যেখানে আপনি সত্যিকারের নেকড়েদের আশ্চর্যজনক সান্নিধ্যে মানুষের সাথে বাস করতে দেখতে পাবেন, আশ্চর্যজনকমিশিগান লেকের উপকূলে আশ্চর্যজনক দৃশ্যাবলী - দর্শনার্থীদের জন্য বীকন৷
তবে, রাজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ হল অ্যাঙ্গেল মাউন্ডস নামক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য - প্রাচীন ঢিবিগুলি সমতল পৃষ্ঠের সাথে শীর্ষে রয়েছে, যেগুলি 12 শতকে মিসিসিপি ভারতীয়রা এই অঞ্চলগুলিতে বসবাস করে। বহু বছর আগে, এই ঢিবিগুলি ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ হিসাবে স্বীকৃত ছিল, এবং আজও তারা প্রচুর সংখ্যক লোককে আকর্ষণ করে যারা ভারতীয় জীবনের এমন একটি প্রাচীন উদাহরণ দেখতে চায়৷
