গ্রেনোবল (ফ্রান্স): শহর এবং এর দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে একটি গল্প

2024 লেখক: Harold Hamphrey | [email protected]. সর্বশেষ পরিবর্তিত: 2023-12-17 10:09

গ্রেনোবল (ফ্রান্স) একটি প্রাচীন শহর যা প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর অস্তিত্বের একেবারে শুরুতে, এই বসতিটিকে কুলারো বলা হত এবং এটি একটি ছোট বসতি ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে, এটি 150,000-এর বেশি জনসংখ্যা সহ একটি অত্যাশ্চর্য আধুনিক শহরে পরিণত হয়েছে। আজ, গ্রেনোবল বিলাসবহুল দর্শনীয় স্থান এবং একটি চটকদার সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে। স্টেন্ডহাল মিউজিয়াম, নটরডেম ক্যাথেড্রাল, সেন্ট লরেন্ট ক্রিপ্ট, বিশ্ব বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য অনেক স্থাপত্য সামগ্রী সহ এখানে এক ডজন জাদুঘর রয়েছে।

শহর সম্পর্কে কিছু কথা

ফ্রান্সের গ্রেনোবল শহরটিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ফরাসি আল্পসের রাজধানী বলা হয়, কারণ এটি পাহাড়ের খুব কাছাকাছি। কিন্তু একই সময়ে, এটি ইউরোপীয় মহাদেশের সবচেয়ে সমতল বলেও বিবেচিত হয়। বসতিটি ড্র্যাচ এবং ইসেরে নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত, এটি পাহাড়ের চূড়া দ্বারা বেষ্টিত, তবে এই সত্য সত্ত্বেও, গ্রেনোবলের ল্যান্ডস্কেপটি দূর থেকে পাহাড়ের মতো দেখায় না। এখানে রয়েছে পুরনো স্থাপত্য।সুরেলাভাবে আধুনিক সংলগ্ন। এবং একই শহরকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

গ্রেনোবল (ফ্রান্স) একটি জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত শহর। এখানে স্টেন্ডাল নিজেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং স্থানীয় জনগণ এই সত্যটির জন্য অবিশ্বাস্যভাবে গর্বিত। 1968 সালে, যখন বসতিটি শীতকালীন অলিম্পিকের রাজধানী হয়ে ওঠে, তখন এটি সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। এটাও মজার যে চাঞ্চল্যকর উপন্যাস "পারফিউমার"-এর বেশ কিছু ঘটনা গ্রেনোবলে সংঘটিত হয়েছে।

সংক্ষিপ্ত ঐতিহাসিক তথ্য

খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে, যেখানে আজ গ্রেনোবল (ফ্রান্স) শহর অবস্থিত, সেখানে প্রথম সুরক্ষিত বসতি গড়ে ওঠে, যাকে কুলারো বলা হত। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিল অ্যালোব্রোজেস উপজাতি। এবং খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীতে জনবসতিটিকে শহরের মর্যাদা দেওয়া হয়। 381 সালে, রোমান সম্রাটদের একজনের সম্মানে এর নামকরণ করা হয়েছিল গ্র্যাটিয়ানোপোলিস। কিন্তু ভাষাগত পরিবর্তনের ফলে গ্রেসিয়ানোপোলিস নামটি গ্রেনোবলের আধুনিক নামে রূপান্তরিত হয়। অস্তিত্বের দীর্ঘ ইতিহাসের সময়, বন্দোবস্তটি ডফিন এবং প্রোভেন্স রাজ্যের সামন্ত গঠনের অংশ ছিল। গ্রেনোবেলেই ফরাসি বিপ্লব শুরু হয়েছিল, যা নাটকীয়ভাবে কেবল শহরেরই নয়, পুরো দেশের ইতিহাসকে বদলে দিয়েছিল। এ কারণেই ফরাসি গ্রেনোবলকে যথার্থভাবে একটি ল্যান্ডমার্ক শহর বলা হয়।

শহরের আকর্ষণ

গ্রেনোবল (ফ্রান্স), যার দর্শনীয় স্থানগুলি সারা বিশ্বের ভ্রমণকারীদের কাছে পরিচিত, ব্যাস্টিল দুর্গটিকে তার খোলা জায়গায় স্থাপন করেছে৷ 16 শতকে, বস্তুর সাইটে একটি প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো ছিল। আমারবাস্তিল 19 শতকে শুধুমাত্র তার আধুনিক চেহারা অর্জন করে। আজ, দুর্গটি একটি ভ্রমণের বস্তু মাত্র।

পর্যটকদের মধ্যে একটি জনপ্রিয় আকর্ষণ হল ক্যাবল কার। এটি শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্রের সাথে বাস্তিলকে সংযুক্ত করেছে। 1934 সালে, একটি ফানিকুলার তৈরি করা হয়েছিল, যার কেবিনগুলি দেখতে একটি ডোডেকাহেড্রনের মতো ছিল এবং একই সময়ে প্রায় 15 জন লোককে পরিবহন করতে পারে। 1976 সালে, যখন ক্যাবল কারটি তার বর্তমান চেহারা পেয়েছিল, তখন এটি শহরের প্রতীকও হয়ে ওঠে।

আরেকটি স্থানীয় আকর্ষণ যা সমস্ত পর্যটকরা দেখার চেষ্টা করে তা হল তিনটি বহুতল টাওয়ার হাউস৷ এগুলি 1968 সালের অলিম্পিকের শুরুর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। বিল্ডিংটি গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত হওয়া সত্ত্বেও, এটি এখনও একটি সম্পূর্ণ আধুনিক চেহারা রয়েছে৷

থ্রি-ইন-ওয়ান ইউনিভার্সিটি

গ্রেনোবল বিশ্ববিদ্যালয় (ফ্রান্স) উচ্চ শিক্ষার তিনটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত। ইউনিভার্সিটি অফ গ্রেনোবল I, যার নাম জোসেফ ফুরিয়ার, এর দশটি অনুষদ রয়েছে, শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য একটি বিভাগ, গ্রেনোবল অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল অবজারভেটরি এবং অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

পিয়েরে মেন্ডেস-ফ্রান্সের নামানুসারে গ্রেনোবল II বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও শিক্ষার চারটি অনুষদ, তিনটি পলিটেকনিক, দুটি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গঠিত।

গ্রেনোবল III ইউনিভার্সিটি। স্টেন্ডহাল- এই পাঁচটি বৈজ্ঞানিক ও শিক্ষা অনুষদ, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ, কেন্দ্রফ্রেঞ্চ, হাউস অফ কালচার অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান।

ইউনিভার্সিটি নিজেই 1339 সালে কাউন্ট হামবার্ট II ডফিন দ্বারা খোলা হয়েছিল এবং তারপরে মাত্র পাঁচটি অনুষদ নিয়ে গঠিত হয়েছিল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস রোমাঞ্চে ভরপুর। এটি হয় বন্ধ, তারপর খোলা, তারপর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। 1970 সালে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের তিনটি স্বাধীন শিক্ষাগত সুবিধায় বিভক্ত করা হয়েছিল।

রন্ধন নগরী

রন্ধনশিল্প হল আরেকটি উপাদান যা গ্রেনোবল বেঁচে থাকে। ফ্রান্স, সাধারণভাবে, তার রন্ধনসম্পর্কীয় আনন্দের জন্য বিখ্যাত। গ্রেনোবলের রন্ধনসম্পর্কীয় খাবারগুলি উদারভাবে বিভিন্ন গুল্ম দিয়ে পাকা হয়, কারণ এখানে তারা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এই শহরে, একটি বিখ্যাত খাবার হাজির, যা আলু দুধের সসে ভিজিয়ে এবং চুলায় ক্রিম দিয়ে বেক করা হয়। এবং শুধুমাত্র ফ্রান্সের এই অঞ্চলেই জনপ্রিয় নীল পনির উৎপাদিত হয়।

এই জাতীয় খাবারগুলি আশ্চর্যজনক পানীয় La Chartreuse 50-প্রুফের সাথে সর্বোত্তম সামঞ্জস্যপূর্ণ। আপনি অসংখ্য পানীয় প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় গ্যাস্ট্রোনমির মাস্টারপিসগুলি চেষ্টা করতে পারেন, যার মধ্যে অনেকগুলি রয়েছে। এখানে সাধারণ ব্রাসারী এবং ফ্যাশনেবল গুরমেট রেস্তোরাঁ উভয়ই রয়েছে।